ডঃ বিধানচন্দ্র রায় এর ব্যক্তিগত জীবনের অজানা কাহিনী | Dr Bidhanchandra Roy | জীবনী
Ami Avijit Bolchi Ami Avijit Bolchi
136K subscribers
80,403 views
1.2K

 Published On Aug 21, 2023

বিধানচন্দ্র মনে করতেন, চিকিৎসা করতে গিয়ে মানুষের মনের গভীর অনুভূতিগুলি বোঝা তাঁর পক্ষে সহজ হয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতা পরবর্তীকালেও প্রশাসক হিসেবে তাঁর কাজে সহায়ক হয়েছে। বিশেষ করে সাধারণ লোকের আর্থিক ও মানসিক অবস্থা বুঝে নেওয়ার ক্ষেত্রে যা খুব জরুরি। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরেও তিনি কলকাতায় থাকলে রোজ সকালে বাড়িতে বিনা পয়সায় ১৬ জন করে রোগী দেখতেন।

আরও একটি তাৎপর্যপূর্ণ উপলব্ধি ছিল তাঁর। বিধানচন্দ্র বলেছিলেন, রোগীর চিকিৎসা করার সময়ে একজন চিকিৎসক নিজের আরাম-আয়েশ-স্বার্থের কথা ভাবেন না। বৃহত্তর পরিসরে মানুষের জন্য প্রকৃত কাজ করতে চাইলেও তেমনই নিজের চাওয়া-পাওয়া, লোভ-লালসা ভুলতে হবে।

নিঃস্বার্থ পরোপকারের শিক্ষা তিনি পেয়েছিলেন বাবা প্রকাশচন্দ্রের কাছে। বিধানচন্দ্র তাঁর সর্বকনিষ্ঠ সন্তান। তাঁর উপরে দুই দাদা, তাঁদের আগে দুই দিদি। বিধানের জীবনে তাঁর পিতার প্রভাব ছিল গভীর ও ব্যাপক।

১৮৮২ সালের ১ জুলাই বিহারের বাঁকিপুরে বিধানের জন্ম। ‘বারো ভুঁইয়া’র একজন, যশোহরের স্বাধীনচেতা রাজা প্রতাপাদিত্য রায় ছিলেন তাঁদের পূর্বপুরুষ। মাথা নিচু করতে না-চাওয়ার দৃঢ়তা বিধানচন্দ্রের চরিত্রেরও একটি বড় দিক।

প্রকাশচন্দ্র
সরকারি চাকরিতে উচ্চপদ পেয়েছিলেন। কিন্তু প্রথম জীবনে তাঁকে অর্থাভাব ও অন্য নানা বাধার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছিল। লেখাপড়াতেও বিঘ্ন ঘটেছিল তাঁর। অদ্ভুত সমাপতনে বাবার সঙ্গে ছেলের জীবনে এখানে মিল পাওয়া যেতে পারে। বিধানকেও বহু ধাক্কা খেতে হয়েছে প্রথম দিকে।

তাঁর মা অঘোরকামিনী দেবী ছিলেন আর এক মহীয়সী নারী। বিয়ের পরে স্বামীর উৎসাহে লেখাপড়া শিখেছেন। তার পরে নিজে মহিলাদের শিক্ষা ও অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে গিয়েছেন। কাজ করেছেন শিশু, অনাথ ও দরিদ্রদের জন্য। তবে দীর্ঘজীবন তিনি পাননি। তাঁর মৃত্যুর সময়ে বিধানচন্দ্র চতুর্দশবর্ষীয় বালকমাত্র।

প্রকাশচন্দ্র ও অঘোরকামিনী উভয়েই ছিলেন ধর্মপরায়ণ। সাধারণ জীবনযাপন হলেও উচ্চ আদর্শ ছিল। একসময়ে প্রকাশ খ্রিস্টধর্মের প্রতি অনুরক্ত হয়েছিলেন। পরে ব্রাহ্মসমাজে যুক্ত হন। প্রসঙ্গত, বিধানচন্দ্রের নাম ঠিক করে দিয়েছিলেন কেশবচন্দ্র সেন। আচারসর্বস্বতার বদলে রোজ ঈশ্বরের উপাসনা-মন্ত্র পাঠ করার অভ্যেস বিধানচন্দ্রেরও ছিল। ঠাকুরমা নাম রেখেছিলেন ভজন।

১৯৫৬ সালে বিধান যখন মুখ্যমন্ত্রী, তখন তৎকালীন সোভিয়েত রাশিয়ার রাষ্ট্রনেতা নিকিতা ক্রুশ্চেভ এখানে এসে কিছু কথাবার্তার সূত্রে বিধানকে সেখানে আমন্ত্রণ জানালে তিনি হেসে বলেছিলেন, ‘‘যে দেশ ঈশ্বরে বিশ্বাসী নয়, এই বয়সে (তখন ৭৪) সেখানে গিয়ে মরতে চাই না।’’ ক্রুশ্চেভ বলেন, ‘‘আপনি তো বিজ্ঞানমনস্ক। ঈশ্বরও দেখেছেন নাকি?’’ বিধানচন্দ্রের জবাব, ‘‘আপনিও তো ইঞ্জিনিয়র। বিদ্যুৎতরঙ্গ চাক্ষুষ করেছেন কখনও?’’ দীর্ঘ কথোপকথনের উপসংহারে ক্রুশ্চেভ একটি বিমান উপহার দিতে চান বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে। পরিবর্তে বিধানচন্দ্র বলেছিলেন, ‘‘দিতে হলে বরং চিকিৎসার কিছু উন্নত যন্ত্রপাতি আমাদের দিন।’’ কাজ হয়েছিল।
#viralvideo
#biography
#bangla
#bidhanchandraroy
#westbengal

show more

Share/Embed