Published On Oct 24, 2018
আমার সুন্দরী পুরুলিয়া আমি তোমায় ভালোবাসি।।
সকল পুরুলিয়াবাসী দের অনুরোধ।।।সবাই এগিয়ে আসুন সুন্দরী পুরুলিয়া কে আরো সুন্দরী করার জন্য।।।
কাশীপুর রাজবাড়ী ( পুরুলিয়া )
মহারাজ জ্যোতিপ্রকাশ সিংহদেও ১৯১৬ সালে এই রাজবাড়ি তৈরি করেন চিন থেকে রাজমিস্ত্রি এনে। টানা ১২ বছর ধরে চলেছিল নির্মাণ কাজ। বেলজিয়াম থেকে বিশাল ঝাড়লন্ঠন নিয়ে এসে লাগিয়েছিলেন প্রাসাদের দরবার হলে।
মধ্যপ্রদেশের উজ্জ্বয়িনীর ধারনগর, ঝালদা, পাড়া, গড়পঞ্চকোট, মহারাজনগর, রামবনি, কেশরগড় হয়ে কাশীপুর।
একের পর এক জনপদ সরতে সরতে পঞ্চকোট রাজবংশের শেষ রাজধানী হয়ে উঠেছিল কাশীপুর। আর ওই রাজাদের বদান্যতায় শুধু ইতিহাসেই নয়, সংস্কৃতির আরকেও সম্পৃক্ত হয়ে ওঠে কাশীপুর। দিগ্বিদিকের পণ্ডিত ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে রীতিমতো ‘নবরত্ন’ সভা বসত রাজ দরবারে। সেই গৌরব এখন বিস্মৃতির আড়ালে চলে যাচ্ছে।
১৮৩২-১৯১৪ এই সময়কালের মধ্যে কাশীপুরের এই বিরাট পরিবর্তন হয়েছিল। তা এসেছিল মূলত পঞ্চকোট রাজবংশের রাজা নীলমণি সিংহদেও ও তাঁর সুযোগ্য নাতি জ্যোতিপ্রসাদ সিংহদেও-র হাত ধরে। ওই দু’জনের কৃতিত্বের নিদর্শন হয়ে আজও দাঁড়িয়ে পঞ্চকোট রাজবাড়ি। এক সময় যে বাড়ির দরবার থেকে ভেসে আসত ঝুমুর, ভাদু থেকে বিষ্ণুপুর ঘরনার উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত। দরবার হল ভরে থাকত মৃদঙ্গের বোল আর বাঁশির মিঠে সুরে। কিন্তু সনাতন সংস্কৃতির সেই সব মণি-মানিক্য উদ্ধারের সরকারি প্রয়াস কোথায়? আক্ষেপ সংস্কৃতি প্রেমীদের। কেন এই রাজবাড়িকে ঘিরে পর্যটনের বিকাশ করা হল না?
ইতিহাস বলছে, ১৮৩২ সালে হুড়ার কেশরগড় থেকে রাজধানী দ্বারকেশ্বর নদের গাঁ ঘেষা কাশীপুরে তুলে নিয়ে আসেন পঞ্চকোট রাজ জগজীবন সিংহ দেও (গরুড় নারায়ণ)। এটি তাঁদের সপ্তম তথা শেষ রাজধানী।
কাশীপুরে এই বংশের সাত রাজা জগজীবন, নীলমণি, হরিনারায়ণ, জ্যোতিপ্রসাদ, কল্যাণীপ্রসাদ, শঙ্করীপ্রসাদ ও ভুবনেশ্বরীপ্রসাদ রাজত্ব করেছিলেন। রাজধানী গড়ে উঠেছিল কাশীপুর, নপাড়া, রঙ্গিলাডি, গোপালপুর, গোপালচক, রামবনি, কল্লোলী মৌজাকে নিয়ে। কাশীপুরের বড়বাঁধে, কাশীপুর-বাঁকুড়া রাস্তার পাশে জোড়বাংলো মন্দিরের আদলে জগজীবনের বাবা মণিলালের সমাধি এখনও রয়েছে। মানভূম, বাঁকুড়া, বর্ধমান, রাঁচি প্রভৃতি জেলায় এই বংশের জমিদারির বিস্তৃতি ছিল ২৭৭৯ বর্গ মাইল। পরবর্তীকালে রাজা জ্যোতিপ্রসাদ সিংহদেও কটক জেলার কিছু জমিদারি কেনেন।
জেলার ইতিহাস গবেষক দিলীপ গোস্বামীর কথায়, “সাত জন রাজত্ব করলেও কাজকর্মের নিরিখে উপরের দিকে দুই রাজা নীলমণি ও জ্যোতিপ্রসাদের নাম উঠে আসে।
তৎকালীন মানভূমে বিভিন্ন কল্যাণমূলক কাজে তাঁদের দান বা সাহায্যের কথা বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য।” তবে নীলমণি সিংহ দেও-র নাম অন্য কারণেও উল্লেখযোগ্য। তিনি ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলেন। সিপাহী বিদ্রোহের সময় তাঁর নেতৃত্বেই পুরুলিয়া ট্রেজারি লুঠ হয়েছিল।।