রথের রশি স্পর্শ করলে কি ফল লাভ হয় |
Tilok Fota Tilok Fota
1.95K subscribers
2,571 views
59

 Published On Jun 15, 2023

|| রথের রশি স্পর্শ করলে কি ফল লাভ হয় ||

জগন্নাথদেবের রথের রশি একটি বার স্পর্শ করার জন্য আকুল হয়ে পড়েন ভক্তরা। পুরী, মাহেশ, ধামরাই, সাচার এমনকি বিশ্বের সকল ইসকনের রথ ---সর্বত্রই রথের রশি ছুঁয়ে দেখার জন্য মানুষের ভীড় উন্মাদনা লক্ষ্য করা যায়। আসলে ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, জগন্নাথদেবের রথের রশি স্পর্শ করলে পুনর্জন্মের কষ্ট সহ্য করতে হয় না।

এক সময় পুুরীর রথযাত্রায় জগন্নাথদেবের রথের রশি ছুঁয়ে সেই রথের চাকার তলায় আত্মঘাতী হত কোনও কোনও ভক্ত।
কেন এই অদ্ভুত মৃৃত্যুবরণ? মানুষের বিশ্বাস শ্রীপুরুষোওমের চাকার নীচে প্রাণ বিসর্জন দিতে পারলে সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত হয়ে স্বর্গারোহণ নিশ্চিত করা যায়।

শ্রীচৈতন্যদেবের অন্যতম প্রিয় শিষ্য সনাতন গোস্বামী অসুস্হতার কারণে একবার রথযাত্রার দিন জগন্নাথদেবের চলন্ত চাকার তলে প্রাণ বিসর্জন দিতে চেয়েছিলেন। তখন মহাপ্রভুই তাঁকে বলেন, সনাতন, এরকম দেহ ত্যাগে যদি কৃৃষ্ণকে পাওয়া যেত তাহলে এক মূহুর্তের মধ্যে আমিও আমার লক্ষ জন্ম তাঁর শ্রীচরণে সমর্পন করতাম। কিন্তু দেহত্যাগে কৃৃষ্ণকে পাওয়া যায় না। এরকম দেহত্যাগ হচ্ছে তমোগুণ। তমোগুণে কৃৃষ্ণকে পাওয়া যাবে না। ভক্তি ছাড়া, ভজন ছাড়া তাঁকে পাওয়ার উপায় নেই।

ইন্দ্রনীলময় পুুরাণের মতে, জগন্নাথের রথের রশি সামান্য স্পর্শ করলেও পুনর্জন্ম হয় না। ' পুনর্জন্ম ন ভূঞতে।' শ্রীজগন্নাথের বামন অবতার রথে। সেই রথ দর্শন করার পর একটু টানতে পারলেই পুনর্জন্মের কষ্ট ভোগ করতে হয় না। সূতসংহিতায় রয়েছে -- ' রথে তু বামনাং দৃৃষ্টা, পুনর্জন্ম ন বিদ্যতে। অতএব ধার্মিক হিন্দু বিশ্বাস করেন যে, রথের রশি ছোঁয়ার থেকে বড় পূণ্য আর কিছুতে হয় না।'

রথযাত্রার এই মহাযাত্রা নিয়ে কপিল সংহিতায় আছে-- ' গুন্ডিচাখ্যং মহাযাত্রা যে পশ্যন্তি মুদনিতাঃ/ সর্বপাপ বিনির্মুক্তা তে যান্তি ভুবন মম।' অর্থাৎ জগন্নাথদেব বলছেন, গুন্ডিচা মহাযাত্রায় যে ব্যক্তি আমাকে দর্শন করবে সে কালক্রমে সব পাপ থেকে মোক্ত হয়ে আমার ভুুবনে যাবে।

রথের রশি ছুঁয়ে রথ টানা শুধু নয়, বেশীর ভাগ মানূষ রথের রশি যতটুকু পারে ছিঁড়েও নেয়। টুকরো টুকরো রথের রশির সুতো মাদুলি ক'রে ছোট ছেলে-মেয়েদের হাতে ও গলায় পরিয়ে দেয়। বড়রাও পরেন। মানুষের বিশ্বাস এই মাদুলি সমস্ত বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা করবে। অসুখ- বিসুখ হলেও তাড়তাড়ি সুস্হ হয়ে ওঠা যাবে। অনেকেই রাতে দুঃস্বপ্ন দেখে। ঘুমের ঘোরে চেঁচিয়ে ওঠে। এরকম কারও মাথায় রশির টুকরো অংশ ছুঁইয়ে দিলে কিংবা তার বালিশের নীচে রেখে ঘুমোলে দুঃস্বপ্ন আসে না।

স্কন্দপুরাণ, বামদেব সংহিতার প্রসঙ্গ টেনে বলা যায় যে, জগন্নাথদেবের রথের রথের দড়ি ধরে টানতে পারলে অশ্বমেধ যঞ্জের ফল লাভ হয়।

® তিলক ফোটা

show more

Share/Embed